মন্দ স্বভাব কখনো ভাল হয় না। মন্দ স্বভাব সবক্ষেত্রে প্রভাব খাটাই। মন্দ স্বভাব মানুষের আচরণ কট্টর। এদের স্বভাবের ফল ইহও পরকালে মন্দই হয়। এই স্বভাব ধর্মকে বিচার বিশ্লেষণ করে দেখলে দেহ (রূপ-নাম) সমষ্টিকে আমি-সে-পুরুষ-স্ত্রী-ব্যক্তি-সত্ত্ব-দেব-ব্রহ্মা নামপ্রজ্ঞপ্তিতে এই মন্দের স্বভাব প্রভাব ফেলে। মন্দ স্বভাবে যেকটি বিশৃঙ্খল স্বভাব আছে সেটি হল তৃষ্ণা-মান-দৃষ্টি। যৌথভাবে তাদের আত্মদৃষ্টির প্রভাব খাটিয়ে সবকিছুকে নিজের মনে করে। ভালমন্দ সজীব নির্জীব সবকিছুর উপর প্রভাব ফেলে। এদের স্বভাব প্রভাব কারো’র কম নয়। এদের মধ্যে নন্দিরাগ তৃষ্ণা ভবের যত্রতত্রে পুনঃপুন জন্ম নেয়। পণ্ডিতগণ সব দুঃখের তাকেই দায়ী করে থাকে। দৃষ্টিগত তৃষ্ণার স্বভাব ভাষায় বলে আমার জ্ঞাতি, আমার পরিষদ, আমার ধন, আমার পদবী, আমার ক্ষমতা, আমার ডিগ্রী বীরত্বের বল দেখিয়ে উচ্চ-নীচদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বি করে। নিজের যেগুণ নেই ভান করে সেগুণটিকে দেখায়। নিজের দোষ গোপন করে অন্যের সামান্য দোষকে বড় করে বদনাম রটায়। এটিও তার ভান ভণ্ডামির মায়াবিনীর ছলনার স্বভাব।
দৃষ্টিগত নন্দিরাগিনীর ঠোকর খেয়ে পিতাকে হত্যা করে রাজ সিংহাসনে বসে। ভিখারী তার মাথাগোঁজার ভাঙ্গাঘরকে রাজপ্রসাদ মনে করে। শুকর মল পেলে দিব্যাহার মনে করে। গোবর কীট গোবর পেলে মহাসুখ মনে করে। আমিত্ব অন্ধ স্বভাবের আমার পরিবার, আমার রাস্তা, আমার গ্রাম, আমার নগর, আমার রাজ্য, আমার দেশ, আমার পরিষদ জাতভেদ রক্তের ভেদাভেদেও দৃষ্টিগত নন্দিরাগের হীন আচরণ। এই দৃষ্টিগত নন্দিরাগ সকলকে ঠোকর দেয়। মানুষের মনে ক্রোধ উপস্থিত হলে হিংস্র হয়ে উঠে। আমি তাকে খাব সে আমাকে খাবে পশুর মত হীনাচরণ করে।
পুণ্যকর্ম করলেও আমিত্বের স্বভাব নিয়ে করে। তৃষ্ণা পুর্বগামী হয়ে দান শীল ভাবনা পুণ্যকর্ম করলেও সেই পুণ্যেরফল মনুষ্য দেব ব্রহ্মা সুখের ঠোকর খেয়ে কর্মের ফল প্রদান শেষ হলে বিনিপাতিক উপদ্রব যত্রতত্র ভুমি অপায়ে পরে। সেটিও দৃষ্টির আমিত্ব স্বভাবের পরিণাম। দুঃখকে সুখ মনে করে; দুঃখের কারন দুঃখসত্যকে আকর্ষণ করে সংসার আবর্তচক্রে অবিচ্ছিন্নভাবে ঘুরে থাকে। অনাত্ম স্বভাব ধর্মটা সম্যকদৃষ্টি, সম্যকসঙ্কল্প, সঠিক মার্গপথ। লোকিক লোকুত্তর স্বভাবকে যথাভূত করে দেখে। পরমার্থ প্রতিত্যসমুৎপন্ন ধর্মের স্কন্ধ, রূপ-নাম, ষড়ায়তন, ধাতু, কারন-ফল সম্পর্কিত ধর্মের স্বভাবকে সবল প্রকৃষ্ট জ্ঞানচক্ষে পুঙ্খানুপুঙ্খ উপলব্ধি করে। প্রজ্ঞা সু-ব্যাখ্যাত স্বয়ং প্রত্যক্ষ ধর্মকে তথা ৩৭-প্রকার বোধিপক্ষিয় ধর্মাচরণের দ্বারা আত্মহিত পরহিতকর জ্ঞান সাধন করে।
সবার ইহ ও পরকালে হিত সুখ মঙ্গল সাধনের হেতু হোক।
লিখেছেন: U Pannya Dipa